ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির উপায়। ডিপ্রেশন রোগের ঔষধ

ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির উপায়। ডিপ্রেশন রোগের ঔষধ


আসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক গণ আমরা জানি যে ডিপ্রেশন অথবা বিষন্নতা এটা হতে পারে ক্ষণস্থায়ী বা দীর্ঘস্থায়ী।আর আপনারা যদি দীর্ঘস্থায়ী ডিপ্রেশনে ভোগেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। তবে সবসময়ই যে চিকিৎসার মাধ্যমে ডিপ্রেশনের মুক্তি মেলবে তা কিন্তু নয়। এজন্য তোমার এই ডিপ্রেশনের থাকার পিছনের কারণটি খুঁজে বের কর, এই কারণগুলো আগে থেকেই প্রতিরোধ করা বেশি দরকার। দৈনন্দিন জীবনে আমরা ছোট ছোট কিছু পরিবর্তন করে ডিপ্রেশন থেকে দূরে থাকতে পারি। চলুন আমরা জেনে নেই ডিপ্রেশন থেকে বের হওয়ার কারণগুলো, ডিপ্রেশনে থাকলে কোন ওষুধ খেলে ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়, ও ডিপ্রেশনের সময় আমাদের করণীয় কাজগুলা কি কি।

ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির উপায়

ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি পেতে হলে আমাদের অনেক করণীয় কাজ আছে তার ভিতরে রয়েছে প্রতিনিয়ত তিন থেকে চার ঘন্টা ব্যায়াম করা। বিভিন্ন গবেষক এর মতে শরীর চর্চা বা ব্যায়াম শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করেযা দেহের কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র  শান্ত রাখে। এবং মাদকদ্রব্য থেকে দূরে থাকতে হবে,কারণ মদ, ফেনসিডিল, ইয়াবা বা অন্যান্য মাদকদ্রব্য গ্রহণের সাময়িক প্রশান্তি মেলে বলে ধারণা করা হলেও তা কিন্তু শরীরের জন্য একেবারেই উপকারী নয় দীর্ঘদিন ধরে মাদকদ্রব্য গ্রহণের ফলে ডিপ্রেশন ও বিষন্নতা লক্ষণ আরো বেশি বৃদ্ধি পায়। আর রয়েছে সীমা নির্ধারণ করতে শেখা, কোন বিষয় অথবা কাজ নিয়ে অতিরিক্ত মগ্ন হয়ে থাকলে ডিপ্রেশন অথবা অস্থিরতা এই দুইটাই বাড়িয়ে দেয়।

এজন্য ব্যক্তি জীবনে ও কর্মজীবনের মাঝখানে সীমা টানা উচিত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে নিজেকে নিয়ন্ত্রিত রাখতে হবে। অনেক গবেষণায় দেখা গেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অতিরিক্ত ব্যবহার করলে এটি পরিপ্রেক্ষিতে ডিপ্রেশনের কারণ হয়ে দাড়ায় এবং আত্মসম্মানবোধ কমিয়ে দেয়। এইজন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার কমিয়ে পরিবার বন্ধু বান্ধব অথবা সহকর্মীদের সাথে বেশি সময় দেওয়া উচিত। এছাড়াও নিজের উপরে যে মানসিক চাপ গুলা থাকে এগুলো থেকে অনেক বিরত থাকতে হবে।বেশিক্ষণ সময় মানুষের চাপ নিয়ে থাকা এটি ডিপ্রেশনের একটি সাধারণ কারণ বলে আমরা জেনে থাকি। কোন বিষয় বা কাজের প্রতি অতিরিক্ত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়ে গেলে তা আর ডিপ্রেশন এর সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। এজন্য ও অতিরিক্ত মানসিক চাপ অথবা চিন্তা করা না করাই শরীরের পক্ষে অনেক উপকার। এতে আপনি নিজের ডিপ্রেশনের হাত থেকে রক্ষা পাবেন।

ডিপ্রেশন হলে কি কি সমস্যা হয়

ডিপ্রেশন একটি সাধারণ মানসিক ব্যাধি। বিশ্বব্যাপী তো এটা অনুমান করা হয় যে ৫% প্রাপ্তবয়স্ক এই রোগে ভোগেন। এটি ক্রমাগত দুঃখ এবং পূর্বের পুরস্কৃত বা আনন্দদায়ক কার্যকলাপে আগ্রহ বা আনন্দের অভাব দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। এটির কারণে ঘুম এবং ক্ষুধা ও ব্যাহত হতে পারে। ডিপ্রেশন হলে মানসিকভাবে অনেক দুর্বল হয়ে পড়ি। আরেকটি মানুষ যদি মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে তাহলে অবশ্যই সে শারীরিকভাবেও দুর্বল হতে থাকবে। এই ডিপ্রেশন ব্যতিতে যে রোগী ভোগেন তার মস্তিষ্ক ধীরে ধীরে বিকল হতে শুরু করে অথবা কাজ করা বন্ধ করে দেয়। আর কোন রোগী যদি এই ডিপ্রেশন নামক এই ব্যতিতে অনেকদিন যাবত আক্রান্ত হয়ে থাকে তাহলে সে নিজের শারীরিক ভারসাম্য হারিয়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে অনেক অসচেতন ও দুর্বল হয়ে পড়ে। ডিপ্রেশন একটি মরণব্যাধি রোগ। আমরা সকলের চেষ্টা করব এই মরনব্যাধি রোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার।

কি কি কারণে ডিপ্রেশন হয়

মূলত আর্থসামাজিক, ও আর্থিক সমস্যা এবং নিম্ন সামাজিক অবস্থা ডিপ্রেশনে ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। ভিটামিন ডি এর অভাবেও ডিপ্রেশনের সৃষ্টি হতে পার। এবং কিছু কিছু ঔষধ সেবনের কারণও ডিপ্রেশন হতে পারে যেমন, জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল,বিটা ব্লকার সহ কিছু ঔষধ বিষন্নতার বর্ধিত ডিপ্রেশনের কারণ হতে পারে। এছাড়া নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবনের কারণেও ডিপ্রেশন শ্রেষ্ঠ হয়ে থাকে। কারণ নেশা দ্রব্য সেবনের পর কোন মানুষই মানসিকভাবে সুস্থ থাকেনা এবং সে শারীরিকভাবেও দুর্বল হয়ে পড়ে। এবং অতিরিক্ত কোন কাজের চাপ নেওয়ার কারণেও এবং সারাদিন ওই সমস্ত কাজ নিয়ে চিন্তা ভাবনা করলেও এই মরণব্যাধি ডিপ্রেশন রোগটি হতে পারে। আমরা সবাই এই বিষয়ে সচেতন ও সতর্কতা অবলম্বন করব।

ডিপ্রেশনের লক্ষণ কি কি

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (Who)এর দেওয়া গাইড লাইন অনুযায়ী ডিপ্রেশনকে যে কয়টি উপায় দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছে সেগুলো হল :দুঃখ, আগ্রহ বা আনন্দ হারিয়ে ফেলা, অপরাধবোধ, নিজেকে মূল্যহীন লাগা, ঘুমের বিরক্তি, ক্লান্তি ও দুর্বল মনোযোগ বিভিন্ন কারণে ডিপ্রেশন হতে পারে হয় জৈবিক অথবা পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির কারণেও ডিপ্রেশন হতে পারে। ডিপ্রেশনের কিছু লক্ষণ নিচে উল্লেখ করা হলো যেমন :শারীরিক অসুস্থতা, ব্যথা বা পীড়া, মস্তিষ্কের রসায়ন, হরমোনের পরিবর্তন ইত্যাদি। আপনার  শরীরের যদি  ডিপ্রেশন নামক এই ব্যাধিটি বাসা বাদে তাহলে আপনি শারীরিক অথবা মানসিকভাবে অনেক দুর্বল হয়ে পড়বেন। আপনার শরীরে ব্যথা বা পীড়া অনুভব হবে।

ডিপ্রেশনের প্রকারভেদ গুলো কি

আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন না যে ডিপ্রেশনের অনেক প্রকারভেদ রয়েছে এই প্রকারভেদ গুলো ডিপ্রেশনের মাধ্যমে প্রকাশ পেয়ে থাকে। ডিপ্রেশন বা বিষন্নতা একেক জনের ক্ষেত্রে একেক রকম হতে পারে। লক্ষণের তীব্রতার উপরে নির্ভর করে ডিপ্রেশনকে কয়েকটি ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে যেমন, মেজর ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডার এম ডি ডি বা গুরুতর ডিপ্রেশন,পার্সিস্ট্যান্ট ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডার পি ডি ডি বা স্থায়ী ডিপ্রেশন, সাইকোটিক বা মানসিক ডিপ্রেশন।ডিপ্রেশনকে এই কয়টি ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে।

ডিপ্রেশন কিভাবে কষ্ট দেয়

ডিপ্রেশন আমাদেরকে অনেকভাবে কষ্ট দিয়ে থাকে নিচে ডিপ্রেশনের কারণে কষ্ট পাওয়ার কিছু কারণ উল্লেখ করা হলো :

১:দিনের বেশিরভাগ সময়ই মন খারাপ থাকে।

২:যেসব কাজে আনন্দ পেত সেসব কাজে আনন্দ বা উৎসাহ কমে যায়

৩:অস্বাভাবিকভাবে ওজন কমতে অথবা বাড়তে পারে।

৪:কাজে বা চিন্তায় ধীরগতি হয়ে যায়।

৫:নিজেকে নিয়ে নেতিবাচক চিন্তা বা নিজেকে দায়ী  মনে হয়।

৬:নিজের শরীরের ওজন কমে যায়। আমরা এ সমস্ত দিক থেকে ডিপ্রেশনের মাধ্যমে অনেক কষ্ট পেয়ে থাকি এবং অস্বাভাবিক হয়ে যায়।

ডিপ্রেশনের রোগের ঔষধ

ডিপ্রেশন রোগের ঔষধ হলো ডিপ্রেস ৫এম জি ট্যাবলেট, এর স্বাভাবিক মাত্রা ৫ মিলিগ্রাম থেকে ১০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত, দৈনিক একবার ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করতে হয়। এই ওষুধের প্রথম ডোজ আপনার প্রতিক্রিয়ার ওপর নির্ভর করে সমন্বয়ে করা হয়। এটি প্রায়ই অন্যান্য বিরোধী -হাইপারটেনসিভ এবং এন্টি-এনালিয়ান ঔষধের সংমিশ্রণ ব্যবহৃত হয়। ডিপ্রেস ৫ এম জি ট্যাবলেটটি ক্যালসিয়াম চ্যানেল ব্লকার হিসেবে কাজ করে যার রক্তবাহী বাহকগুলোকে প্রসারিত করে রক্ত প্রবাহ উন্নতি করে। এই ওষুধটি ডিপ্রেশন রোগের থেকে মুক্তি পাওয়ার ও এই মরন ব্যাথির রোগ থেকে বাঁচার একমাত্র ঔষধ।

ডিপ্রেশনে থাকা রোগীর খাবার

ডিপ্রেশনে থাকার রোগীর জন্য কিছু খাবার রয়েছে যেগুলা তারা প্রতিনিয়ত খেলে এই ডিপ্রেশন নামক রোগ থেকে অনেকটাই স্বস্তি অনুভব করবে। ডিপ্রেশনে থাকা রোগীর জন্য ভালো-মন্দ খাবার এবং ভিটামিন যুক্ত খাবারগুলা খাওয়া অনেক উপকারী যেমন, শাক সবজি, মাছ মাংস, ডিম, ও অন্যান্য ভিটামিনযুক্ত খাবার। এ সমস্ত খাবার গুলো প্রতিনিয়ত খেলে এই মরনব্যাধি রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

শেষ কথা উপরে লিখিত বিষয়গুলো যেমন ডিপ্রেশন রোগের লক্ষণ, ডিপ্রেশন রোগের ঔষধ, ডিপ্রেশন রোগের খাবার ইত্যাদি তথ্যগুলো জানতে এবং বুঝতে পেরছেন। যদি আপনাদের কোন সমস্যা হয় তাহলে আপনারা কমেন্ট সেকশনে এসে কমেন্ট করে আমাদের কাছ থেকে অজানা তথ্য গুলো জেনে নিতে পারেন। ধন্যবাদ।

পরবর্তী পোস্ট পূর্ববর্তী পোস্ট
কোন মন্তব্য নেই
এই পোস্ট সম্পর্কে আপনার মন্তব্য জানান

দয়া করে নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন - অন্যথায় আপনার মন্তব্য গ্রহণ করা হবে না ।

comment url